প্রমত্তা পদ্মার বুকে এখন ধু ধু বালুচর। ফারাক্কার প্রভাবে দিনদিন শুকিয়ে যাচ্ছে নদীটি। চার দশকে পদ্মার আয়তন কমেছে অর্ধেক। নদীতে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চর দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোনো নদী। গেলো কয়েক বছরে এ অঞ্চলে পদ্মার বেশকিছু শাখা নদীও শুকিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে লাখ লাখ কৃষক।
বর্ষা ছাড়া পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির দেখা মিলে না। বছরে ২-১ মাস নদীতে পানি থাকে আর বাকি সময়জুড়ে বালু আর বালু। যার ফলে গত এক দশকে রাজশাহী ও আশপাশের এলাকায় কোনো ধরনের বন্যা হয়নি।
ফারাক্কার সরাসরি শিকার রাজশাহীর মানুষ। পানির প্রবাহ কম থাকায় নদীর তলদেশ ক্রমান্বয়ে ভরাট হচ্ছে। কয়েক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। গঙ্গার ডলফিন ও ঘড়িয়াল আর দেখা যায় না। আগের মতো পদ্মায় ইলিশের ঝাঁক আসে না। নদীকেন্দ্রীক নানা ধরনের পেশা হারিয়ে লাখ লাখ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়।
পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতদিন পদ্মা নিজস্ব ধারায় চলতে পেরেছে ততদিন এটির রূপ ছিল প্রমত্তা। কিন্তু ১৭৭৫ সালের এপ্রিলে ভারতে ফারাক্কা বাঁধ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দিন যত যাচ্ছে রুগ্ন হচ্ছে পদ্মা। রাজশাহী পয়েন্টে খরা মৌসুমে পানির উচ্চতা কমেই চলেছে। এ বছর গত ১২ মে এখানকার পানির উচ্চতা নেমে যায় ৬ দশমিক ৯৫ মিটারে। চলতি বছরে এটিই সর্বনিম্ন স্তর। বর্ষা মৌসুমেও এখন আর আগের মত পানির প্রবাহ থাকে না।